নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর চরে আলো রাণী মজুমদার (৩৫) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ পাওয়া গেছে। নিখোঁজের এক দিন পর লাশটি পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।

ওই গৃহবধূর স্বামী অনুপ রায়। তিনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পটুয়াখালীতে পরিদর্শক পদে কর্মরত।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে কীর্তনখোলা নদীর চরমোনাই ঘাট এলাকায় মরদেহটি ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। এরপর সদর নৌ থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

ওসি বলেন, দুই সন্তান নিয়ে আলো বরিশাল নগরীর কাশিপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। মৃতের ভাই আমাদের জানিয়েছেন, আগে থেকেই আলো রাণীর মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কয়েকবার চিকিৎসাও করিয়েছেন।

তিনি জানান, সাধারণত তাকে ঘরের বাইরে বের হতে দেওয়া হতো না। গতকাল সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন। আজকে তার মরদেহ পাওয়া গেল নদীতে।

মিজানুর রহমান আরও জানান, নিখোঁজের পর গতকাল সোমবার এয়ারপোর্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিল পরিবার থেকে। আজকে তার স্বজনরা অপমৃত্যু মামলা দিতে এসেছেন।

এদিকে আলো রাণীর স্বামী অনুপ রায় বলেছেন, তার স্ত্রী সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পারিবারিক কাজে বাসার বাইরে বের হন। কিন্তু দুপুরের দিকেও তিনি বাসায় ফিরছিলেন না। বিষয়টি তাকে অবহিত করার পর সন্ধ্যার দিকে বরিশালে এসে থানায় জিডি করি।

অনুপ রায় বলেন, ঘটনার পর আত্মীয়স্বজনদের কাছে তার খবর জানার চেষ্টা করি। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তার মরদেহ কীর্তনখোলা নদীর চরে আটকে থাকতে দেখে পুলিশকে স্থানীয় লোকজন খবর দেন।

বরিশাল সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার জানান, আলো রাণী সোমবার রাতে ঢাকাগামী এমভি সুন্দরবন ১৬ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাপ দিয়েছেন ।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা যে তথ্য পেয়েছি, এই নারী গতকাল রাতে লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল। কেন ঝাঁপ দিয়েছিল তা এখনো জানা যায়নি। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন আমরা তৈরি করেছি। প্রাথমিকভাবে মরদেহের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত করা হলে তার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

এ বিষয়ে সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন জানিয়েছেন, গতকাল রাতে কীর্তনখোলার চরমোনাই এলাকায় বামনীর চর-সংলগ্ন স্থানে এক নারী লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দেন। পরে লঞ্চ থামিয়ে সন্ধান চালানো হয়েছিল। কিন্তু নদীতে তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। লঞ্চ স্টাফরা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও তাকে খুঁজে পাননি।

মামুন/