ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
Sharenews24

বিদেশে ট্রেনিংয়ে গিয়ে নারী সহকর্মীর সঙ্গে ‘ফুর্তি’: তদন্ত কমিটি গঠন

২০২৪ জুন ১৮ ১২:০৮:৪৩
বিদেশে ট্রেনিংয়ে গিয়ে নারী সহকর্মীর সঙ্গে ‘ফুর্তি’: তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শীর্ষ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে।

জানা যায়, কোরিয়ায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ১৫৭ চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর।

তবে দেশে ফিরে তাদের ৭২ জন সুপার হাসপাতালে যোগ দিয়েছেন, বাকি ৮৫ জন যোগ দেননি। তাদের কেউ বিদেশ ভ্রমণ হিসেবে, কেউ মোটা টাকা ভাতা পাওয়ার আশায় তদবির করে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, প্রশিক্ষণে গিয়ে একজন সহকারী কন্ট্রোলার তো হোটেলের বাইরে গিয়ে নারী সহকর্মীর সঙ্গে ‘ফুর্তি’ করার সময় ধরা পড়েন। বিষয়টি ই-মেইলে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

এছাড়া, আরেকজন সহকারী পরিচালক কসমেটিকসের দোকানে চুরি করে ধরা পড়েন। তিনি দুবার চুরি করে পার পেলেও তৃতীয়বার ধরা পড়ে যান। তাকে কোরিয়ান পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

বিষয়টি ই-মেইলে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে জানালে তাকে সাসপেন্ড করা হয়। পরে ভিসি তার চাকরি ফিরিয়ে দেন।

জানা গেছে, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে যোগ দেওয়ার শর্তে বিএসএমএমইউর ১৫৭ চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ২ থেকে ৪ মাসের প্রশিক্ষণে দক্ষিণ কোরিয়ায় যান।

বিএসএমএমইউর তথ্য অনুযায়ী, কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন ১৫৭ জন। ৫২ চিকিৎসক, ২৯ কর্মকর্তা, ৫৩ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ২৩ জন টেকনিশিয়ান।

প্রশিক্ষণ শেষে ৬ চিকিৎসক, ৫ কর্মকর্তা, ৫০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ১১ জন টেকনিশিয়ানসহ ৭২ জন যোগ দিয়েছেন। বাকি ৮৫ জন যোগ দেননি।

বিএসএমএমইউর তথ্যমতে, ২০২১-২২ সালে পাঁচটি গ্রুপে বিএসএমএমইউর বিভিন্ন বিভাগের ৫২ জন চিকিৎসক দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিতে যান। তারা ২ থেকে ৪ মাস প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাদের প্রত্যেককে দৈনিক ৭৫ ডলার প্রশিক্ষণ ভাতা দেওয়া হয়।

এই হিসাবে যারা ২ মাস প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারা একেকজন সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা আর যারা ৪ মাস ছিলেন তারা ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন। তাদের যাতায়াত, হোটেল ভাড়া, খাওয়া প্রভৃতি খরচ মিলিয়ে আরও কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

কিন্তু প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে মাত্র ৬ জন চিকিৎসক সুপার স্পেশালাইজড যোগ দিয়েছেন, অবশিষ্ট ৪৬ জন চিকিৎসক যোগ দেননি।

শুধু যে চিকিৎসকরাই সুপার হাসপাতালে যোগদান করেননি, তা-ই নয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৮৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীও সুপার হাসপাতালে যোগ দেননি। তাদের যারা ২ মাসের প্রশিক্ষণ নেন, তারা প্রতিদিন ৬০ ডলার ভাতা পেয়েছেন। এই হিসাবে প্রতিজন ২ মাসে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ভাতা পেয়েছেন। তাদেরও আসা-যাওয়া, হোটেল ভাড়া, খাওয়া খরচ প্রভৃতি মিলিয়ে আরও কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

বিএসএমএমইউর তথ্য অনুযায়ী, কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন ১৫৭ জন। ৫২ চিকিৎসক, ২৯ কর্মকর্তা, ৫৩ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ২৩ জন টেকনিশিয়ান। প্রশিক্ষণ শেষে ৬ চিকিৎসক, ৫ কর্মকর্তা, ৫০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ১১ জন টেকনিশিয়ানসহ ৭২ জন যোগ দিয়েছেন।

এরমধ্যে ৮৫ জন যোগ দেননি। তাদের কেউ বিদেশ ভ্রমণ হিসেবে, কেউ মোটা টাকা ভাতা পাওয়ার আশায় তদবির করে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, সুপার স্পেশালাইজড প্রজেক্টের শর্তগুলোর মধ্যে ছিল দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ। প্রকল্পের টাকা দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে কিছু অপ্রয়োজনীয় লোকও প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। যার প্রশিক্ষণ কোন কাজে আসছে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩-এ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধন করেন। দুই মাস পর ২৭ ডিসেম্বর, দেশের প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি আউটডোরে রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু করে।

প্রতিদিন কয়েক হাজার রোগী হাসপাতালের আউটডোর সুবিধাগুলিতে চিকিত্সা করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে হাসপাতালের ইনডোর চিকিৎসা শুরুর কথা থাকলেও তা করা সম্ভব হয়নি।

দক্ষ জনবল নিয়োগ না হওয়া, অর্গানোগ্রামের অভাব, মেডিকেল অফিসার নিয়োগে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে হাসপাতালটি চালু করা যায়নি।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে