ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
Sharenews24

প্রকৌশলীকে দেড় কোটি টাকার জমি ‘দান’ করলেন কাঠমিস্ত্রি!

২০২৪ মে ১৫ ১৮:১৯:৫৭
প্রকৌশলীকে দেড় কোটি টাকার জমি ‘দান’ করলেন কাঠমিস্ত্রি!

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মজিবুর রহমান সিকদার অবৈধ সম্পদকে বৈধতা দিতে ভিন্ন এক কৌশল অবলম্বন করেছিলেন।

তবে এরপরও শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাননি তিনি। দুদকের অনুসন্ধানে তার অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে।

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এ প্রকৌশলী চা বিক্রেতা, পান বিক্রেতা, মুদি দোকানদার, কাঠমিস্ত্রি, কৃষক এবং প্রবাসী শ্রমিকের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের ২০৩.৫ শতাংশ জমি দান গ্রহণ করেছেন। যদিও যারা তাকে এসব জমি দান করেছেন তারা কেউই তার রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় নন।

জানা যায়, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কর্মরত ছিলেন মজিবুর রহমান সিকদার। তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে। ঢাকায় রমনার সিদ্ধেশ্বরী রোডে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৪ মে) অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে প্রকৌশলী মজিবুর রহমান সিকদাররের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে পিআরএলে যাওয়া মো. মজিবুর রহমান সিকদার অবৈধ আয়কে বৈধ করার জন্য ১৮টি দলিল মূলে চা বিক্রেতা, পান বিক্রেতা, মুদি দোকানদার, কাঠমিস্ত্রি, কৃষক এবং প্রবাসী শ্রমিকের কাছ থেকে হেবাবিল এওয়াজনামা দলিলের মাধ্যমে ১ কোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকা মূল্যের ২০৩.৫ শতাংশ জমি দান হিসেবে গ্রহণ করেন।

তবে দলিল দাতাদের সঙ্গে মো. মজিবুর রহমানের রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই। দলিল দাতা এবং দলিল গ্রহীতার আর্থিক অবস্থা বিবেচনা, গৃহীত বক্তব্যের আলোকে উক্ত হেবাবিল এওয়াজ দলিল গ্রহণযোগ্য নয়।

অন্যদিকে ভুয়া রেকর্ডপত্র দেখিয়ে মৎস্য খামার থেকে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ২৫৭ টাকা আয় দেখালেও এর সমর্থনে যথাযথ রেকর্ডপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।

এসব কারণে প্রকৌশলী মজিবুর রহমান সিকদারের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে মোট ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।

আসামি মো. মজিবুর রহমান সিকদার সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পদ বাবদ ১০ কোটি ৭৮ লাখ ৯০ হাজার ৯৩৬ টাকার ঘোষণা দেন। তবে দুদকের অনুন্ধানে বেরিয়ে আসে ভিন্ন তথ্য।

তার নামে মোট স্থাবর সম্পদ ১২ কোটি ২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩৬ টাকার তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ, বাকি ১ কোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

অন্যদিকে, অনুসন্ধানে ব্যয়সহ প্রাপ্ত নিট ১২ কোটি ৮৬ লাখ ৩৬ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য পায় দুদক। যার মধ্যে ৮ কোটি ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭৭ সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া যায়। বাকি ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৮ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং ২৬(২) ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

শেয়ারনিউজ, ১৫ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে