ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
Sharenews24

ভয়ংকর সিন্ডিকেটের কবলে বাংলাদেশ বিমান

২০২৪ মে ২৯ ০৫:৫৫:৩৭
ভয়ংকর সিন্ডিকেটের কবলে বাংলাদেশ বিমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভয়ংকর সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিমান। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে বিমানের টিকেটের মূল্য বহুগণ বেড়েছে।

জানা গেছে, মালয়েশিয়া যেতে বাংলাদেশি নতুন কর্মীদের সময় শেষ হচ্ছে শুক্রবার। এই ডেডলাইনের সুযোগ নিয়ে একটি সিন্ডিকেট চক্র মালয়েশিয়া রুটের টিকিট বিক্রি করছে কয়েকগুণ বেশি দামে। ২৫-৩০ হাজার টাকার টিকিটের দাম এখন ১ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশ বিমান সূত্র বলছে, মালয়েশিয়ায় যাওয়া কর্মীদের সুবিধার্থে চারটি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছে বাংলাদেশ বিমান। বিমান বলছে, মালয়েশিয়া থেকে ফেরার সময় খালি ফ্লাইট আসবে। সে কারণে টিকিটের দাম বাড়তি ধরা হয়েছে। বিশেষ ফ্লাইটের টিকিট ৬৮ হাজার থেকে শুরু করেছে বিমান। এটির দাম এখন লাখ ছাড়িয়েছে।

সাধারণত ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর যেতে উড়োজাহাজের টিকিটের সর্বোচ্চ দাম থাকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। চলতি মাসের শুরু থেকেই তা তিন গুণের বেশি হয়ে যায়। মাসের মাঝামাঝি সময়ে এটি ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা হয়। এখন আর কোনো উড়োজাহাজের আসন ফাঁকা নেই। বিমানের বিশেষ ফ্লাইটের টিকিটের দামও ১ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ মে) কয়েক দফা চেষ্টা করেও ওয়েবসাইটে কোনো টিকিট পাওয়া যায়নি। ৩১ মে পর্যন্ত সব টিকিট ‘সোল্ড আউট’ দেখাচ্ছে, মানে সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

বিমানের টিকিট বাণিজ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অভিযোগ করেছেন ফারিয়েল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইথার ফারিয়েল হামিদ। ২৬ মে পাঠানো লিখিত এক অভিযোগে তিনি বলেন, মালয়েশিয়া যেতে বিমানের ঘোষিত বিশেষ ফ্লাইটে সরাসরি টিকিট করতে পারছে না এজেন্সি। গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে (জিডিএস) ফ্লাইটের টিকিট দেখাচ্ছে না। এই সুযোগে বিমানের কর্মকর্তারা দুর্নীতি করছেন। এতে টিকিটের দাম ১ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তিনি এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ প্রায় চার বছর বন্ধ ছিল। এরপর ২০২২ সালের জুলাইয়ে নতুন করে চালু হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪ লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়া গেছেন। কর্মী পাঠানো নিয়ে অনিয়ম, দেশটিতে গিয়ে কর্মীদের চাকরি না পাওয়া ও শ্রম শোষণের অভিযোগ করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা। এই কারণে আবারও শ্রমবাজার বন্ধ করে দিয়েছে মালয়েশিয়া। তবে ইতোমধ্যে অনুমোদিত কর্মীদের দেশটিতে যেতে ৩১ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এতে চলতি মাসে উড়োজাহাজ টিকিটের চাহিদা বেড়ে যায়। বাংলাদেশে মালয়েশিয়া যাওয়ার টিকিটের দাম এমনিতেই বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতের কলকাতা থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর যেতে সময় লাগে ৪ ঘণ্টা। একই গন্তব্যে যেতে ঢাকা থেকে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। স্বাভাবিক সময়েই যেখানে ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার সবচেয়ে কম দামের টিকিট ২৪-২৫ হাজার টাকা, সেখানে কলকাতা টু মালয়েশিয়া টিকিটের মূল্য ১৪-১৫ হাজার টাকা। তার মানে, সব সময়ই টিকিটের দাম বেশি থাকে। আর এখন সংকটের সুযোগ নিয়ে চড়া দামে টিকিট বিক্রি করেছে সরকারি-বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা।

বিদেশে কর্মী পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা) বলছে, মালয়েশিয়া যেতে একজন কর্মী সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ করছেন। এর মধ্যে টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য খরচ আরও বাড়িয়ে দেয়। টিকিট সংগ্রহ করে শেষ পর্যন্ত সব কর্মী পাঠানো যাবে কি না, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা আছে। উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রির এজেন্সিগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সিজ অব বাংলাদেশ (আটাব) বলছে, উড়োজাহাজগুলো জ্বালানি খরচের কথা বলে টিকিটের বাড়তি দাম রাখে। বিভিন্ন উৎসবের সময় এটি আরও বাড়িয়ে দেয়।

শেয়ারনিউজ, ২৯ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে