ঢাকা, শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
Sharenews24

সিগন্যাল ভুলে এক লাইনে দুই ট্রেন

২০২৪ মে ০৪ ২২:০৬:৩৫
সিগন্যাল ভুলে এক লাইনে দুই ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরে একই লাইনে আসা দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের একদিন পর সিরাজগঞ্জেও দুটি ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে চালকরা ট্রেন থামিয়ে দেওয়ায় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান যাত্রীরা।

শনিবার (০৪ মে) বেলা আড়াইটার দিকে কলকাতা থেকে ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনের ৫ নম্বর লাইনের সেতুর দিকে আসছিল। একই সময়ে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস একই লাইন দিয়ে যাচ্ছিল।

এই অবস্থায় দুটি ট্রেনের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে ৭৬৯ নম্বর ধূমকেতু এক্সপ্রেসের লোকোমাস্টার মহিদুল ইসলাম ও সহকারী লোকোমাস্টার হেদায়েতুল্লাহ আলামিন ট্রেন থামিয়ে দেন।

এরপর মৈত্রী এক্সপ্রেসের লোকামাস্টারও ট্রেনটি থামিয়ে দেন। এতে রক্ষা পায় দুই ট্রেনের যাত্রীরা। বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় ট্রেনের গতি কম থাকায় ভুল সিগন্যালের বিষয়টি চালকদের পক্ষে ধরা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন রেল কর্মকর্তারা।

এর আগের দিন শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন এলাকায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এতে টাঙ্গাইল কমিউটারের পাঁচটি বগি দুমড়েমুচড়ে যায়, দুটি ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ১০টি বগি লাইনচ্যুত হয়। আহত হয় যাত্রীবাহী ট্রেনের চালকসহ অন্তত চারজন। এর পরদিনই সিরাজগঞ্জে ভুল সিগন্যাল দেওয়ার ঘটনা ঘটল।

রেল কর্মকর্তারা জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৪ নম্বর লাইনে ধরে স্টেশনে প্রবেশ করার কথা ছিল। তবে পয়েন্টসম্যান ভুল করে ৫ নম্বর লাইনে ঢোকার সিগন্যাল দিয়ে দেয়।

বঙ্গবন্ধু সেতুতে ওঠার আগে-পরে ট্রেনের গতি থাকে ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে। ফলে দুই ট্রেনের চালকই বিষয়টি দেখতে পেয়ে ট্রেন থামিয়ে দেন।

পরে ধূমকেতু ট্রেনকে পেছনের দিকে নিয়ে পুনরায় ৪ নম্বর লাইনে সিগন্যাল দেওয়া হয়। এরপর দুই ট্রেনই নির্ধারিত গন্তব্যে চলে যায়।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনের ইনচার্জ মনিরুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতু প্রকল্পের আওতায় সেখানে নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। নতুন লাইনও বসানো হয়েছে।

রেলের কর্মীদের পাশাপাশি প্রকল্পের কিছু কর্মীও সিগন্যালে কাজ করার জন্য দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার নিয়োগ পাওয়া এক কর্মচারী এই ভুল করেছেন।

রেলের কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু রাখার কথা ছিল। শনিবার ট্রেন দুটির সিগন্যাল দেন প্রকল্পের কর্মীরা। ভুল পয়েন্টে অপারেশন করা হয়েছিল।

সিগন্যাল ভুল থাকায় একই লাইনে দুটি ট্রেন চলে আসে। নিয়ম হলো তারা আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। কিন্তু আজ আমার চিন্তা ছিল না.

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানান, সেতু প্রকল্পের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনে নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে।

পুরনো রেললাইন পরিবর্তন কাজের অংশ হিসেবে সেখানে ৪, ৫ ও ৬ নম্বর লাইন নতুন করে বসানো হয়েছে। এখন এই তিনটি লাইনে ট্রেন চলাচল করবে এবং ১, ২ ও ৩ নম্বর লাইন উঠিয়ে নতুন করে তৈরি করা হবে।

শনিবারই প্রধান লাইনের সঙ্গে ৪, ৫ ও ৬ নম্বর লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, রেলওয়ের সিগন্যালিং সিস্টেমের প্রধান দায়িত্ব অপারেশন বিভাগের। কিন্তু ওই বিভাগে জনবল স্বল্পতার কারণে চুক্তির অংশ হিসেবে রেলসেতু প্রকল্পের কিছু শ্রমিক দেওয়া হয়েছে।

স্টেশনে একজন অবসরপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার (চুক্তিতে) আছেন, যিনি যেকোন পয়েন্ট সেট করার নির্দেশ দেন। কর্মীরা সেটি সেট আপ করে স্টেশন মাস্টারকে নিশ্চিত করেন। তখন স্টেশন মাস্টার সংকেত দিলেন। শুনেছি শনিবারের ভুল স্টেশন মাস্টারের।

শেয়ারনিউজ, ০৪ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে