ঢাকা, শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
Sharenews24

মদিনার সাত দর্শনীয় স্থান, যা আপনাকে অবশ্যই মুগ্ধ করবে

২০২৪ মে ০৪ ১২:২৪:০১
মদিনার সাত দর্শনীয় স্থান, যা আপনাকে অবশ্যই মুগ্ধ করবে

মক্কার পর মদিনা শহরকে ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্র শহর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ সেখানে ইসলামের সর্বশেষ নবী দ্বারা নির্মিত ‘নবীর মসজিদ’, মানে মসজিদে নববি অবস্থিত।

প্রতি বছর লাখ লাখ মুসলমান হজ ও ওমরাহ পালন করার উদ্দেশে ইসলামের প্রথম রাজধানী মদিনায় গমন করেন। ৬২২ সালে নির্মিত এই মসজিদটি আজও বিশ্বের বৃহত্তম মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে বিবেচিত।

ইসলামের প্রথম মসজিদ হিসেবে পরিচিত 'মসজিদ-ই-কুবা' মদিনা শহরে অবস্থিত। ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে মদিনা নগরীর নাম ছিল 'ইয়াথ্রিব'। সে সময় এটি বাণিজ্যিক ও ভৌগোলিক গুরুত্বের জন্য সুপরিচিত ছিল।

কারণ এই শহরে পাহাড়, সমতল, মরুদ্যান, সোনা, রূপা ও তামার খনি ছিল। সৌদি পর্যটন ওয়েবসাইট 'ভিজিট সৌদি' অনুসারে, মুসলিম ও বিদেশিরা কোনো বিধিনিষেধ ছাড়াই মদিনার পর্যটন আকর্ষণে ভ্রমণ করতে পারবেন।

এই স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে জাবাল উহুদ, জাবাল জাবাব, জাবাল আল রামাহ (তীরন্দাজ পাহাড়) এবং জাবালে নূর।

এসব স্থানের ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়া মদিনায় অনেক জাদুঘরও আছে, যেখান থেকে আপনি এই শহরটির ইতিহাস সম্বন্ধে নিমিষেই জানতে পারবেন।

মদিনার সেরকম ‘পবিত্র’ কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে এখানে বলা হয়েছে।

কুবা মসজিদ

কুবা মসজিদ ইসলামের ইতিহাসে প্রথম মসজিদ, যার ভিত্তি ইসলামের নবী নিজ হাতে স্থাপন করেছিলেন। মসজিদে নববী থেকে মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে কুবা মসজিদ অবস্থিত। মদিনায় প্রবেশের আগে তিনি কুবায় চার দিন কাটিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়।

মুসলমানরা আরও বিশ্বাস করেন, মসজিদে কুবায় নামাজ পড়া উমরাহ’র সমান পূণ্যের কাজ। এর অনন্য স্থাপত্য এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্যের জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার লোক এটি পরিদর্শন করে।

সাতচল্লিশ মিটার উচ্চতার একটি সাদা গম্বুজসহ এই মসজিদে চারটি মিনার রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম মিনারের নির্মাণের কৃতিত্ব হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজের।

কিবলাতিন মসজিদ বামসজিদে কিবলাতাইন

মদিনার বনু সালামা এলাকায় অবস্থিত এই মসজিদ সম্পর্কে বলা হয়, দুই হিজরিতে এই মসজিদে নামাজের সময় ‘কিবলা’ (নামাজের সময় যেদিকে মুখ করে দাঁড়ানো হয়) পরিবর্তনের নির্দেশ পাওয়া যায়। নবী (স.)-এর সাথে তাঁর সাথীরা নামাজের সময় জেরুজালেমের ‘বাইতুল মুকাদ্দাস’ বা ‘বাইতুল মাকদিস’-এর পরিবর্তে মক্কার কাবার দিকে মুখ ফিরিয়েছিলেন। যেহেতু এই মসজিদে দু’টি ভিন্ন কিবলার দিকে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা হয়েছে, তাই এই মসজিদের নামকরণ করা হয় ‘মসজিদ কিবলাতিন বা মসজিদে কিবলাতাইন, অর্থাৎ দুই কিবলাবিশিষ্ট মসজিদ।

মসজিদের অভ্যন্তরভাগ গম্বুজ বিশিষ্ট এবং বাইরের খিলানটি উত্তর দিকে। এই মসজিদটি অটোমান বা উসমানীয় সাম্রাজ্যের সময় পুনর্নির্মিত হয়েছিল। সৌদি বাদশাহ ফাহদ বিন আব্দুল আজিজের শাসনামলে এটি সংস্কার করা হয়।

হিজায রেলওয়ে

হিজাজ রেলওয়ে নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৯০০ সালের দিকে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ককে মদিনার সাথে সংযুক্ত করার জন্য হিজাজ রেলওয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কারণ সে সময় দামেস্ক থেকে মক্কা পৌঁছাতে অন্তত ৪০ দিন লেগে যেত। পথিমধ্যে শুকনো মরুভূমি ও পাহাড়ি পথ অতিক্রম করতে গিয়ে কাফেলার অনেক যাত্রী মারা যেত।

কিন্তু ১৯০৮ সালে এটি চালু হলে সেই ৪০ দিনের যাত্রা নেমে আসে মাত্র পাঁচ দিনে। যদিও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ১৯১৬ সালে এটি বন্ধ হয়ে যায়।

উরওয়া বিন আল-জুবায়ের প্যালেস

হিজরির প্রথম বছরে নির্মিত উরওয়া বিন আল-জুবায়ের প্রাসাদটি ইসলামী যুগের সূচনার অন্যতম নিদর্শন। যা মসজিদে নববী থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি মাটি ও পাথর দিয়ে তৈরি। মেঝেতে কিছু জায়গায় ইটের টালি এবং লাভা পাথর রয়েছে।

তিনটি বিশাল বাগান, একাধিক কক্ষ (প্রাচীন স্থাপত্য, আসবাব দিয়ে সজ্জিত) এবং রান্নাঘর রয়েছে। একটি পানির কূপও আছে। ধারণা করা হয়, মক্কার হজযাত্রীরা এই কূপটি পানি পান করতে ব্যবহার করতেন।

মাদাইন সালেহ বা আল-হাজর কিলা

হিজাজ রেলওয়ে স্টেশনের কাছে মাদাইন সালেহ বা আল-হাজর কিলা। এটি সৌদি আরবের একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। প্রথম শতাব্দীর নাবাতিয়ান সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ এখানে পাওয়া যায়। পর্যটকদের জন্য ১১১টি সমাধি খোলা আছে। সেখানকার গুহাগুলোতে প্রাচীন চিত্রকর্মের নিদর্শন পাওয়া যায়।

আলী মসজিদ

মদিনার মসজিদ ফাতেহএলাকায় অবস্থিত 'আলি ইবনে আবি তালিব' মসজিদ, সংক্ষেপে যাকে বলা হয় আলী মসজিদ। এই স্থানটি ইসলামী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এটি ৭০৬ এবং ৭১২ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল এবং ১৯৯০0 সালে সৌদি বাদশা ফাহদ ইবনে আবদুল আজিজের শাসন আমলে সংস্কার করা হয়েছিল।

যে আলী মসজিদ নির্মিত সেখানে ইসলামের নবী ঈদের নামাজ আদায় করেছিলেন। এই মসজিদের দৈর্ঘ্য ৩১ মিটার বা ৯৩ ফুট এবং প্রশস্ততা ২২ মিটার বা ৬৬ ফুট। মসজিদটির সাতটি গম্বুজ আছে।

শেয়ারনিউজ, ০৪ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে