ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪
Sharenews24

আজ জাতিসংঘের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, ফিলিস্তিন পেতে যাচ্ছে পূর্ণ সদস্যপদ

২০২৪ এপ্রিল ১৮ ০৭:২৫:১৫
আজ জাতিসংঘের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, ফিলিস্তিন পেতে যাচ্ছে পূর্ণ সদস্যপদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিসংঘে পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ফিলিস্তিনের নাম সুপারিশ করা হবে কিনা-- তা নিয়ে আজ ভোট দেবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদ।

আজ ১৮ এপ্রিল নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বিকেল ৩ টার দিকে হবে ভোট। জাতিসংঘের সনদ অনুসারে, কোনো দেশ যদি এই সংস্থার সদস্য হতে চায়—সেক্ষেত্রে তাকে প্রথমে আবেদনের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ জোগাড় করতে হয়।

আবেদন পত্রের সঙ্গে সেই সুপারিশ সংযুক্ত করলেই কেবল দেশটিকে সদস্যপদ দেওয়ার ব্যাপারটি বিবেচনা করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ।নিরাপত্তা পরিষদের মোট সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ১৫টি। এই ৫টি রাষ্ট্রের মধ্যে স্থায়ী এবং বাকি ১০টি অস্থায়ী। যে কোনো স্থায়ী সদস্য আপত্তি উত্থাপন করে পরিষদে উত্থাপিত কোনো প্রস্তাব বাতিল করতে পারেন। এই ক্ষমতাটি ‘ভেটো’ নামে পরিচিত। কেবল স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ‘ভেটো’ ক্ষমতা রয়েছে।

অস্থায়ী সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ভেটো ক্ষমতা নেই। জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্রের মধ্য থেকে তাদের বেছে নেওয়া হয় এবং এই সদস্যপদের মেয়াদ হয় ২ বছর।

নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের পদ প্রতি মাসে আবর্তিত হয়। ১৫টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি এক মাসের জন্য কাউন্সিলের সভাপতিত্ব রাখতে পারে। মাল্টা এপ্রিলে নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য।

শুক্রবারের ভোটে যদি নিরাপত্তা পরিষদের অন্তত ৯টি সদস্যরাষ্ট্র পক্ষে ভোট দেয় এবং স্থায়ী ৫ সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং চীন— স্থায়ী এই পাঁচ সদস্যরাষ্ট্রের কোনোটিই যদি ভোটের প্রস্তাবে ভেটো না দেয়— কেবল তাহলেই নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ অর্জন করতে পারবে ফিলিস্তিন।

এর আগে ৮ এপ্রিল নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে মাল্টার জাতিসংঘ দূত ভানেসা ফ্রেজিয়ের জানিয়েছিলেন, জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদের জন্য ফিলিস্তিনের পক্ষে সুপারিশের ব্যাপারে চলতি এপ্রিলেই সিদ্ধান্ত নেবে নিরাপত্তা পরিষদ।

এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার কাউন্সিলের অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র আলজেরিয়া ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্য হওয়ার সুপারিশে ভোটের জন্য একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছে। পরে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ভোটের দিন ঠিক করা হয়। বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, পূর্ণ সদস্যপদের জন্য বহু বছর ধরে চেষ্টা-তদবিরের পর ২০১১ সালে ‘পর্যবেক্ষক’ হিসেবে জাতিসংঘে প্রবেশের অনুমতি পায় ফিলিস্তিন। এই ক্যাটাগরিভুক্ত দেশ বা ভূখণ্ডগুলো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আলোচনা-বিতর্কে যুক্ত হতে পারে, কিন্তু উত্থাপিত কোনো প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দেওয়ার এক্তিয়ার তাদের নেই।

গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর ফের পূর্ণ সদস্যপদের জন্য তৎপরতা শুরু করে ফিলিস্তিন, আর এই তৎপরতার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় শেষ হবে নিরাপত্তা পরিষদের ভোটের মধ্য দিয়ে।

শান্তিপূর্ণ দ্বিরাষ্ট্র সমাধান

পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা এবং পূর্ব জেরুজালেম— এই তিন ভূখণ্ডের সমন্বয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র চায় ফিলিস্তিন। কিন্তু এই ৩টি ভূখণ্ডই ১৯৬৭ সাল থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরায়েল।

নিরাপত্তা পরিষদ গত কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে "ফিলিস্তিন" এবং "ইসরায়েল" নামে দুটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে সমর্থন ও পরামর্শ দিয়ে আসছে। ১৯৯০ সালে নরওয়ের রাজধানী অসলোতে এ বিষয়ক একটি দলিলে স্বাক্ষরও করেছিল ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা।

ভোএই প্রসঙ্গে, ইসরায়েলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্র এবং নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য জাতিসংঘে মার্কিন প্রতিনিধি দলের প্রধান লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড ভেটো দেওয়ার ইঙ্গিত দেননি।

তবে রয়টার্সকে তিনি বলেছেন,, ‘আমরা প্রকৃতপক্ষে যে জায়গায় পৌঁছাতে চাই, অর্থাৎ দ্বিরাষ্ট্র সমাধান….. আমাদের মনে হয় না যে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বা ভোট আমাদের সেই জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে।’

শেয়ারনিউজ, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে