ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
Sharenews24

গরম কমাতে হিট অফিসার বুশরা আফরিনের আরও পরামর্শ

২০২৪ এপ্রিল ২৩ ১৩:১৩:৩৯
গরম কমাতে হিট অফিসার বুশরা আফরিনের আরও পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশজুড়ে গরমের তীব্রতা বাড়ায় ২০ এপ্রিল থেকে চলছে তিন দিনের হিট অ্যালার্টের সতর্কতা। তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস অবস্থা দেশের প্রধান শহর ঢাকার বাসিন্দাদের।

পরিস্থিতি যখন এমন- তখন স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কী করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন? এক বছর আগে দায়িত্ব নেওয়া বুশরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি কী কী করেছেন এবং গরম কমাতে শহরবাসীদের দিয়েছেন কিছু পরামর্শও।

বুশরা আফরিন গত এক বছর যাবত কাজ করছেন। কাজ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দায়িত্ব পেয়ে আমরা বসে নেই। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় যত দ্রুত সম্ভব আমরা তা নিয়েছি। নগরবাসীর সচেতনতা বাড়াতে ‘হিট অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন’ চলছে। নগরে গাছ লাগানোর পাশাপাশি তার পরিচর্যা নিশ্চিত করার বিষয়টিও আমরা দেখছি।’

বুশরা আফরিন বলেন, ‘‘এই ছাড়া নগরের তাপমাত্রা ও দূষণ কমাতে ‘টু অ্যাবেল ফরেস্ট’ (দুটি বন করার চেষ্টা) তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। কল্যাণপুর ও বনানীতে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে আমরা নগর বন তৈরি করতে যাচ্ছি। যা একই সঙ্গে শীতলীকরণ, বায়ুদূষণ রোধ এবং মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধি করবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ আরও কিছু সরকারি-বেসরকারি ও এনজিওর সঙ্গে আমরা যুক্ত হয়ে বেশ কিছু কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছি।’’

বুশরা আফরিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নিযুক্ত হওয়ার পর ঢাকার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘ঢাকায় পানীয় জলের সুব্যবস্থা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি। পাশাপাশি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘কুলিং স্পেস’ এর ব্যবস্থা করার জন্য সিটি করপোরেশনকে পরামর্শ দিয়েছি। যেন পথচারীরা বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পান।’’

গত এক বছরে শহরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে বুশরা আফরিন বলেন, “ঢাকার বস্তি জনসংখ্যা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের মধ্যে তাপপ্রবাহের ভয়াবহতা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা। তাদের মধ্যে জনসচেতনতা বাড়াতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। এছাড়া বস্তি এলাকায় বৃক্ষ রোপণ করে তারা সম্পৃক্ত হয়েছেন। এখন তারা গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করছেন।”

তিনি বলেন, ‘সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে হিট মোকাবিলা করবো, এটাই আমার কাজ। তবে আমি স্বাধীনভাবে কাজ করছি না, আমাকে সিটি করপোরেশনের অধীনে কাজ করতে হচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে প্রায় ৩০ মিলিয়নের বেশি মানুষের বসবাস, শহর খুব দ্রুত বড়ো হচ্ছে। পরিস্থিতিও খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, হিট নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে এখানে প্রচুর বিনিয়োগের প্রয়োজন।’

অনুন্নত এলাকায় গরমের প্রকোপ বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত বছর আমরা শহরের অনুন্নত অন্তত ১৫টি এলাকায় সবুজায়ন প্রোগ্রাম করেছি। যেখানে পাঁচ হাজারেরও বেশি বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সবুজায়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের আমরা বুঝিয়েছি, নিজে ও পরিবারের সদস্যদের কীভাবে তীব্র গরম থেকে বাঁচাতে পারবো।’

গত বছর হিট মওসুমে নিয়োগ হওয়ায় তখন বেশি কাজ করতে পারেননি জানিয়ে বুশরা বলেন, ‘কাজ শুরু করলে রাতারাতি পরিবর্তন হবে না। আস্তে আস্তে এই পরিবর্তনের ফল পাওয়া যাবে।’

মানুষকে সচেতন করতে একটি সহজ ভাষায় ছবি সম্বলিত বুকলেট প্রকাশের কাজ চলছে বলে জানান এই চিফ হিট অফিসার।

তবে তিনি নিজেও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে না পারায় অনেক সময় লাগছে বলেও দাবি করেন। এছাড়া সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ পেলেও টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ করতে বেশি সময় লাগে। এছাড়া আমলাতন্ত্রও কাজে বড় বাধা বলে জানান বুশরা।

বিদ্যমান পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন আশা করা উচিত নয় উল্লেখ করে বুশরা বলেন, সমালোচনার তোয়াক্কা না করে কাজ করেই সময় পার করছেন তিনি।

চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন তীব্র গরম থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন।

শেয়ারনিউজ, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে