ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
Sharenews24

সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নেই ৬ হাজার কোটি টাকা

২০২৩ আগস্ট ১২ ১২:০০:০৪
সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নেই ৬ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে এক সপ্তাহ ভালো থাকলে পরের দুই সপ্তাহেই পতন। এভাবে সপ্তাহ পার হলেই বিনিয়োগকারীদের পুঁজি খোঁয়া যাচ্ছে। বিদায়ী সপ্তাহেও পতনের কবলে পড়ে বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ৩৫টি কোম্পানির শেয়ারে দাম বেড়েছে, বিপরীতে কমেছে ১৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দর। আর তাতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বা বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।

একই অবস্থা অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। বাজারটিতেও পুঁজি কমেছে ৫ হাজার ৭৯৯ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তবে সিএসই-তে তার আগের সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বেড়েছিল সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের সপ্তাহের মতই গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা বাজার পর্যবেক্ষণ করেছেন, যারা বিনিয়োগ করেছেন তারা সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করেছেন। তাদের মধ্যে কিছু স্ত্রিপ্টে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা ছিল শেয়ারবাজারে। ফলে দরপতনের মধ্যদিয়ে সপ্তাহ শেষ হয়েছে।

এ দিকে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাজারে সাপোর্ট প্রদান ও তারল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই পর্যবেক্ষণে থাকা বিনিয়োগকারীরা এখন বাজারে অংশগ্রহণ করতে পারেন। ফলে আশা করা যায়, আগামী সপ্তাহজুড়ে বাজারে সূচকের কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, গেল সপ্তাহের সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর মূলধন ছিল ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩৭০ কোটি ৫৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা। আর শেষ দিন বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) লেনদেন শেষে মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৯ কোটি ৪৭ লাখ ১৪ হাজার টাকায়।

যার ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে টাকার অঙ্কে পুঁজি কমেছে ৫ হাজার ৮৭১ কোটি ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৪৬ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে কমেছে ০.৭৫ শতাংশ। এর আগের সপ্তাহে মূলধন বেড়েছিল ১৭ হাজার ৪৭১ কোটি ৭০ লাখ ৯১ হাজার ১৮৮ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহের তিনদিন পতন আর দুদদিন সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুই কর্মদিবস রোববার ও সোমবার দরপতন হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার সূচকের উত্থান হয়েছে। কিন্তু তার পরদিন বুধবার আবারও দরপতন হয়। তবে বৃহস্পতিবার সূচক সামান্য বেড়েছে। আরও দরপতন হতে পারে এই ভয়ে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে গেল সপ্তাহে বাজারে লেনদেন হয়েছে মোট ৩৮৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এর মধ্যে ৩৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, তার বিপরীতে কমেছে ১৪৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০৬টির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ৭৬টির, কমেছিল ৯৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২১৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩২.৬১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৯৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে ও ডিএস-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৭১ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯৬৩ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ৮৯২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন কমেছে, শতাংশের হিসাবে যা ৩০.১১ শতাংশ।

গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে লেনদেন হয়েছে, ফুয়াং ফুডের, সোনালী পেপার, রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা,আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, লিগেসী ফুটওয়্যার, এমারেল্ড অয়েল, দেশবন্ধু পলিমার, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং জেএমআই হসপিটাল লিমিটেডের শেয়ার।

দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক ৯০ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৫৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সপ্তাহটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ১২ লাখ ৯১ হাজার ১৭৫ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬১ কোটি ৭২ লাখ ৩ হাজার ৭৭ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৮টির, কমেছে ১২২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।

শেয়ারনিউজ, ১২ আগস্ট ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে