ঢাকা, বুধবার, ৮ মে, ২০২৪
Sharenews24

মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে বিনিয়োগকারীদের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

২০২৩ আগস্ট ০৯ ২১:৩৫:১২
মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে বিনিয়োগকারীদের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

শাহ মো. সাইফুল ইসলাম:মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে দেশের শেয়ারবাজারে একটি ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। মিউচ্যুয়াল ফান্ড ভালো হবে মানে এই নয়, মার্কেটে প্রতিষ্ঠানগুলোর লেনদেন বেড়ে যাবে। আমরা বুঝাতে চেয়েছি মিউচ্যুয়াল ফান্ড থেকে অনেক বেশি রিটার্ণ পাওয়া যাবে। এখান থেকে যে রিটার্ণ পাওয়া যাবে, তা এফডিআর এর চেয়েও অনেক বেশি।

মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে শেয়ারনিউজের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বিনিয়োগকারীদের উদ্দ্যেশ্যে এমন মতামত জানালেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে আমাদের বাজারে ভুল ধারণা রয়েছে। আমি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ট্রেডিংয়ের বিষয়ে কখনোই কিছু বলিনি। আমি বলেছি আপনারা মিউচ্যুয়াল ফান্ড কিনেন। মিউচ্যুয়াল ফান্ডে আগে যেটা ছিলো না, ডিভিডেন্ড দিতো না। এখন ১০ থেকে ২০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিবে।’

অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম বলেন, ‘আমার কথা ছিলো আপানারা মিউচ্যুয়াল ফান্ড কিনেন ১০ থেকে ২০ শতাংশ ডিভিডেন্ড পাবেন। এটা এফডিআরের থেকেও অনেক বেশি।’

তিনি বলেন, ‘আর বিনিয়োগকারীরা বুঝেছে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সেকেন্ডারি মার্কেটে কেনাবেচা করলে খুব লাভ হবে। আমি তো সেকেন্ডারি মার্কেট নিয়ে কোন কথা বলতেই পারি না। আমি বলেছি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ লাভ জনক।’

তিনি আরও বলেন, আমাদের বাজারে যে কয়টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড রয়েছে এরমধ্যে ৯৫ শতাংশ মিউচ্যুয়া ফান্ডই ১০ থেকে ২০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। যা আগে ছিলো না। এখানে যারা বিনিয়োগ করেছে তারা এফডিআর এর চেয়ে অনেক বেশি লাভ করতে পেরেছে।

মিউচুয়াল ফান্ড প্রায় ২৫০ বছরের পুরোনো একটি বিনিয়োগ মাধ্যম। সারা বিশ্বে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড এখনো খুব বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতের সর্বমোট বিনিয়োগকৃত সম্পদের পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। আর বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই অনুপাত ৬০ শতাংশের বেশি। তারপরও অধ্যাপক রুবাইয়েত উল ইসলামের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশনের আমলে দেশে মিউচুয়াল ফান্ড খাত সামনের দিকে এগোচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘ মেয়াদে খুব ভালো মুনাফা দিচ্ছে, এই রকম পুরোনো সম্পদ ব্যবস্থাপকদের পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নতুন বেশ কিছু প্রতিশ্রুতিশীল সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠানও শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সনদ পেয়েছে। তারা নতুন বেশ কিছু মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদের জন্য বাজারে আনছে। যেগুলোর নৈপুণ্য ভবিষ্যতে বেশ ভালো হবে মনে করা হচ্ছে।

মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনার সঙ্গে তিন ধরনের প্রতিষ্ঠানের সরাসরিসম্পৃক্ততা রয়েছে। সেগুলো হলো—১. বিএসইসিতে নিবন্ধিত ট্রাস্টি বা হেফাজতকারী প্রতিষ্ঠান। যার কাজ হচ্ছে ট্রাস্ট চুক্তি অনুযায়ী, ফান্ডের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা। ২. বিএসইসির নিবন্ধিত কাস্টডিয়ান প্রতিষ্ঠান; যার অধীনে নির্দিষ্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ঝুড়িতে থাকা সব সম্পদ নিরাপদে রাখা। ৩. বিএসইসির নিবন্ধিত সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান। যারা নির্দিষ্ট মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ যথাযথভাবে বিনিয়োগের দায়িত্ব পালন করে।

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৩৬টি ক্লোজড এন্ড বা মেয়াদি এবং ৬৮টি ওপেন এন্ড বা বে-মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে।

বে-মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারীরা প্রতি সপ্তাহের শেষ দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বা সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ফান্ডের সর্বশেষ নেট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) বা প্রকৃত সম্পদমূল্য জানতে পারেন। ওই মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপকের ওয়েবসাইটে এই এনএভি প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান তার কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দুই সপ্তাহ পরপর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে জমা দেয়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ কোথায় কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে, চাইলে তা সহজেই জানতে পারবেন। ওই মিউচুয়াল ফান্ডের ত্রৈমাসিক আর্থিক বিবরণীতে বিনিয়োগের সব তথ্য থাকে।

শেয়ারনিউজ, ২৫ জানুয়ারি ২০২২

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে